যে কোন ইন্টারভিউর জন্য যে  সকল কমন প্রশ্নের উত্তর আপনাকে অবশ্যই জানতে হবে

যে কোন ইন্টারভিউর জন্য যে সকল কমন প্রশ্নের উত্তর আপনাকে অবশ্যই জানতে হবে


ইন্টারভিউয়ে প্রশ্নকর্তা কী প্রশ্ন করবেন এটা কেউই আগে জানতে পারে না।কিন্তু কিছু কমন প্রশ্ন সব কোম্পানির ইন্টারভিউয়ে প্রার্থীকে জিজ্ঞাসা করা হয়ে থাকে। সেসকল প্রশ্নের জবাব সঠিকভাবে দিতে পারলে তুমি অবশ্যই বাকিদের তুলনায় এক ধাপ এগিয়ে থাকবে।

আপনার নিজের সম্পর্কে কিছু বলুনঃ

ইন্টারভিউর শুরুতেই  সাধারণত এই প্রশ্ন করা হয়ে থাকে। একটু ঘুরিয়ে প্রশ্ন করলে এভাবে করে যে , আপনার সিভি সম্পর্কে কিছু বলুন। প্রশ্নটিকে সহজ মনে করে অগোছালোভাবে উত্তর দিলে হবে না। এই প্রশ্নটির উত্তর থেকে তোমার আত্মবিশ্বাস, উৎসাহ ও কমিউনিকেশন স্কিল সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়।

এই প্রশ্নের উত্তরে তোমার শিক্ষাগত যোগ্যতা, পরিবার ও পূর্ববর্তী কাজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরতে পারো। “আমি মুভি  দেখতে পছন্দ করি”, “আমার অনেক বন্ধু আছে” এধরনের উত্তর পরিহার করো। সুন্দর ও সাবলীল ভাষায় নিজেকে উপস্থাপন করো।

আপনার সবচেয়ে বড় ও শক্তিশালী গুণ কী  কী?

ইন্টারভিউয়ে জিজ্ঞেস করা সবচেয়ে কমন প্রশ্নগুলোর মধ্যে এটি অন্যতম। নিজের সম্পর্কে তুমি কতটুকু পজিটিভ এবং তুমি কোন কোন বিষয়ে দক্ষ তা জানতে পারা যায় এই প্রশ্নের উত্তরের দ্বারা।

তুমি মানুষের সাথে ভালোভাবে মিশতে পারো ও আচার ব্যবহার ভালো এভাবে এক কথায় উত্তর না দিয়ে সংক্ষেপে তা আলোচনা করলে ভালো হয়। উত্তর দেয়ার সময় ভেবে-চিন্তে নিজের  গুণের কথা প্রকাশ করো। যেমনঃ আমি যেকোনো কাজ নিখুঁতভাবে সম্পূর্ণ করার চেষ্টা করি।পরিকল্পনার মাধ্যমে ধাপে ধাপে সামনে এগোই। এক্ষেত্রে বলে রাখা ভালো যে কোম্পানি সাধারণত এমন প্রার্থী খোঁজে যারা ৩ টি কাজ ভালোভাবে করতে পারে এবং সেগুলো হল আয় বাড়ানো, সময় বাঁচানো, ব্যয় কমানো।

আপনার দুর্বল দিকগুলো কী কী?

এই প্রশ্ন করার উদ্দেশ্য তুমি তোমার দুর্বল দিকগুলো জানো কিনা এবং কীভাবে তা কাটিয়ে উঠো।এই প্রশ্নের উত্তরে “ আমি অনেক রগচটা”, “আমার ধৈর্য কম” এভাবে সরাসরি না বলে একটু ঘুরিয়ে বলো এবং তুমি তোমার দুর্বলতাকে কীভাবে কাটিয়ে উঠেছো সেটা অবশ্যই বলবে।

 আপনি কী জানেন আমাদের কোম্পানি সম্পর্কে?

এই প্রশ্নের উত্তর থেকে বোঝা যায় তুমি কোম্পানির সাথে কাজ করতে কতটা আগ্রহী এবং কতটা ডেডিকেশনের সাথে তুমি কাজ করবে। তাই এই জন্য ইন্টারভিউর পূর্বে অবশ্যই  কোম্পানি সম্পর্কে ভালভাবে জানতে হবে।

 আগের চাকুরীটি আপনি কেন ছেড়েছেন?

এক্ষেত্রে আগের চাকুরী সম্পর্কে কোনো নেগেটিভ কথা বলা যাবে না এবং আগের সহকর্মীদের প্রশংসা করতে হবে। উত্তরটা এভাবে দিতে পারো “ আমার দক্ষতা ও  পেশাগত যোগ্যতা বাড়ানোর জন্য আমি আরো ভালো চাকুরীর সন্ধানে আছি। ”

আপনি কীভাবে চাপ সামলান?

চাপের মাঝে কাজ করার সময় আমি খুব দ্রুত একটি রুটিন বানিয়ে নেই। আমাদের সকল কাজকে ২ টি ক্যাটেগরির মাঝে ফেলা যায়। গুরুত্বপূর্ণ কাজ এবং ইমারজেন্সি কাজ। আবার কিছু কাজ একই সাথে গুরুত্বপূর্ণ ও ইমারজেন্সি হয়ে থাকে। সেসকল কাজকে অগ্রাধিকার দেয়া উচিত।

বছর পর আপনি নিজেকে কোথায় দেখতে চান ?

তুমি কতটা দূরদর্শী তা যাচাই করা যায় এর উত্তরের মাধ্যমে।এর উত্তর এভাবে দিতে পারো যে ৫ বছর পর কোম্পানির উচ্চপদে তুমি নিজেকে দেখতে চাও।

আপনার নেতৃত্বের গুণাবলী সম্পর্কে কিছু বলুন।

মানুষকে প্রভাবিত করতে পারা, নেতৃত্ব দেয়া, নেগোশিয়েট করতে পারা ,সঠিক পদক্ষেপ নেয়া। এসকল গুণাবলি তুলে ধরতে পারেন এবং তোমার এ বিষয়ে পূর্বের অভিজ্ঞতার সংক্ষিপ্ত বর্ণনা করতে পারো।

আপনি কি দলবদ্ধ কাজ করতে পারেন?

দলবদ্ধ হয়ে সঠিকভাবে কাজ করতে পারা একটি বড় ও অতি প্রয়োজনীয় একটি গুণ। এর উত্তরে বলবে, “অবশ্যই। আগের কর্মক্ষেত্রে দলের অধীনে থেকেই আমরা সঠিক সময়ে নিয়মিত প্রজেক্টের কাজ শেষ করেছি।”


দলবদ্ধ কাজে আপনি নিজেকে কোন পজিশনে দেখতে পছন্দ করেন?

দলবদ্ধ কাজে তোমার পূর্বের অভিজ্ঞতা থেকে এই প্রশ্নের উত্তর দাও। যেমন উত্তরটি এমন ও হতে পারে যে নতুন কিছু শেখার জন্য আমি যেকোনো পজিশনে থাকতে পছন্দ করি।


আমাদের কেন আপনাকে নিয়োগ করা উচিত ?

এই প্রশ্নের উত্তরে যদি প্রশ্নকর্তা সন্তুষ্ট থাকেন তাহলে তোমার চাকুরীর সম্ভাবনা যেমন অনেক বেড়ে যাবে ঠিক তেমনি অসন্তুষ্ট হলে সম্ভাবনা অনেক কমে যাবে। কাজেই ভেবে চিন্তে ও গুছিয়ে নিজের গুণাবলির কথা তুলে ধরো। নিজের ব্যাপারে এমন কিছু বলো যা তোমাকে অনন্য করে তুলবে।


গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে আপনি কতটুকু বিচক্ষণ?

কর্মজীবনে প্রায়ই তোমাকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে হবে। কর্মচারীদের সিদ্ধান্তের উপরই কোম্পানির লাভ-ক্ষতি ও ভবিষ্যৎ নির্ভরশীল। এই প্রশ্নের জবাবে বলা যেতে পারে “ সিদ্ধান্ত নেয়া কখনই সহজ কাজ নয়। সিদ্ধান্ত নেয়ার সময় আমি পুরো বিষয়ের খুঁটিনাটি যাচাই করব, আমার টিমের সদস্যদের সাথে এই বিষয়ে আলোচনা করব, আমার পূর্বের অভিজ্ঞতা থাকলে কাজে লাগাবো এবং কোম্পানির জন্য সর্বোচ্চ মঙ্গলজনক কাজটি করব।


পরিবর্তনের সাথে মানিয়ে নেয়ার ক্ষমতা আপনার কতটুকু?

পরিবর্তন একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া।তোমার জীবনের কোনো ঘটনার সংক্ষিপ্ত বিবরণ দিয়ে তা ব্যাখ্যা করতে পারো।আমি পূর্বে অনেকবার পরিবর্তনের সাথে খাপ খাইয়ে চলেছি এবং ভবিষ্যতেও পারব। আমার আগের কর্মক্ষেত্রে আমাদের প্রজেক্টের মেন্টর পরিবর্তন হওয়ার পর নতুন মেন্টর আমাদের প্ল্যান ও স্ট্রাটেজিতে অনেক পরিবর্তন আনেন এবং সফলতার সাথেই আমি প্রজেক্টটা সম্পন্ন করি।


ইন্টারভিউ দেওয়ার সময় উচ্চারণের দিকে খেয়াল রাখা ও যাবতীয় প্রশ্নের উত্তর ব্যাখ্যা করে দেয়া প্রয়োজন। রুমে যাওয়ার পূর্বে অবশ্যই মোবাইল সাইলেন্ট করে নেয়া ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আগের রাতেই গুছিয়ে নেয়া দরকার। নিজের উপর আস্থা রেখে ইন্টারভিউ দেয়া গুরুত্বপূর্ণ।